উচ্চ রক্তচাপ

শেয়ার করুন

সুচিপত্র

স্বাভাবিক রক্তচাপের চেয়ে যদি দীর্ঘসময় (১২ মাস) ধরে রক্তচাপ বেড়ে থাকে তাহলে তাকে উচ্চরক্তচাপ বলে।

উচ্চরক্তচাপ হয়েছে কি করে বুঝবেন

সাধারণত বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রেই উচ্চরক্তচাপের তেমন কোনো লক্ষণ বা উপসর্গ থাকে না। কারো কারো ক্ষেত্রে উচ্চরক্তচাপের যেসব লক্ষণ ও উপসর্গ দেখা দেয় –

  • হাল্কা মাথা ব্যথা
  • মাথা ঘোরা
  • নাক দিয়ে রক্ত পড়া

সাধারণত উচ্চরক্তচাপের গুরুতর পর্যায়ে এই লক্ষণগুলো দেখা দেয়।

কখন ডাক্তার দেখাবেন

  • যখন আপনি উপরের লক্ষণগুলো অনুভব করবেন।
  • যখন আপনার বয়স ৩০ এর উপরে এবং আপনি উচ্চরক্তচাপ নিয়ে চিন্তিত।
  • যদি একবার আপনার উচ্চরক্তচাপ আছে বলে ডাক্তার নির্ণয় করেন।
  • আপনার পরিবারের কারো উচ্চরক্তচাপের ইতিহাস থাকলে।

কী ধরনের চিকিৎসা আছে

  • জীবনযাপনের ধরন পরিবর্তন:

১. জীবনধারার পরিবর্তন যেমন যিনি একেবারেই হাঁটেন না তাকে নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস করতে হবে, যিনি কম শারীরিক  পরিশ্রম করেন তাকে পরিমিত শারীরিক কাজকর্ম ও পরিশ্রম করতে হবে।

২. ওজন বেশি হলে তা কমাতে হবে।

৩. খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ অর্থাৎ প্রয়োজনমতো ও পরিমিত খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।

  • ওষুধ:

    ১. উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ওষুধ সেবন করতে হবে।

কী কী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা প্রয়োজন

  • রক্তচাপ মাপা
  • প্রস্রাব, রক্ত নিয়মিত পরীক্ষা করা
  • ইসিজি করা

বাড়তি সতর্কতা

সুষ্ঠু ও নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করতে হবে।

কীভাবে উচ্চরক্তচাপ প্রতিরোধ করবেন

  • স্বাস্থ্যসম্মত খাবার যেমন- ফলমূল, শাকসব্জি, শস্যদানা এবং কমচর্বিযুক্ত খাবার খেতে হবে।
  • খাবারে লবণের পরিমাণ কমাতে হবে।
  • শরীরের ওজন ঠিক রাখতে হবে।
  • শারীরির কাজকর্ম বা পরিশ্রম বাড়াতে হবে।
  • ধূমপান করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • দুশ্চিন্তা করবেন না এবং অতিরিক্ত চাপ নেবেন না।
  • নিয়মিত রক্তচাপ মাপতে হবে।
  • প্রয়োজনীয় বিশ্রাম নিতে হবে।

যা মনে রাখতে হবে

  • ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ওষুধ সেবন করতে হবে।
  • নিয়মিত ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।
  • স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। যেমন- স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়া, অতিরিক্ত ওজন কমানো, নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করা, মদ্যপান ও ধূমপান বর্জন করা।
  • দুশ্চিন্তা পরিহার করা।

উচ্চরক্তচাপ কাদের বেশি হয়?

বয়স বাড়ার সাথে সাথে উচ্চরক্তচাপের ঝুঁকি বেড়ে যায়। মধ্যবয়সের শুরুতে পুরুষদের মধ্যে উচ্চরক্তচাপের ঘটনা খুবই সাধারণ। বেশিরভাগ মহিলাদের ক্ষেত্রে মাসিক বন্ধ হওয়ার পর উচ্চরক্তচাপের সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়া অন্যান্য যাদের উচ্চরক্তচাপ হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে-

  • পরিবারে উচ্চরক্তচাপের ইতিহাস থাকলে।
  • অতিরিক্ত ওজন হলে।
  • শারীরিক কাজকর্ম বেশি না করলে।
  • তামাক সেবন করলে।
  • খাবারে অতিমাত্রায় লবণ ব্যবহার করলে।
  • কমমাত্রায় পটাসিয়াম গ্রহণ করলে।
  • খাবারে ভিটামিন ডি’র পরিমাণ কম হলে।
  • চাপের মধ্যে থাকলে।
  • উচ্চমাত্রায় কোলেস্টোরল, ডায়াবেটিস, কিডনীর সমস্যা থাকলে।
  • ঘুমের মধ্যে যাদের শ্বাস বন্ধ হয়ে যায়।
  • গর্ভকালীন সময়ে মহিলাদের উচ্চরক্তচাপের সমস্যা হতে দেখা যায়।

উচ্চরক্তচাপ থেকে কি ধরনের জটিলতা দেখা দেয়?

উচ্চরক্তচাপ থেকে যে ধরনের শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে-

  • হার্ট এ্যাটাক
  • স্ট্রোক
  • হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ
  • কিডনীর সমস্যা
  • চোখের সমস্যা
  • রক্তে চর্বি বাড়া
  • ডায়াবেটিস
  • অন্যান্য জটিলতা।