শীতের শেষে অসুখ-বিসুখ

শেয়ার করুন

সুচিপত্র

এখন শেষ রাত এবং ভোররাতে তাপমাত্রা কমে যায় এবং দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাপমাত্রা কিছুটা বেশি থাকে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাপমাত্রার এই ওঠানামার ফলে কিছু কিছু ভাইরাস শরীরের ওপর আক্রমণের সুযোগ পায়। এমন আবহাওয়ার জেরে বেশি মাত্রায় সক্রিয় হয়ে পড়ছে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া৷ সে কারণে জ্বর, গলা বসে যাওয়া ও সর্দি-কাশির প্রকোপ বাড়ছে৷ এতে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই৷ ভাইরাসের কারণে জ্বর হলে সাধারণত সাত দিনের মধ্যে এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। তবে হঠাৎ ঠান্ডা যাতে না লাগে, তার জন্য বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে।

উপসর্গ

এসব রোগী মূলত জ্বর, কেউ কেউ মাথাব্যথা, সর্দি, অরুচি, গা-ব্যথা, কাশির উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসেন। তবে আক্রান্তদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যাই বেশি। সেই সঙ্গে কোনো কোনো শিশু আক্রান্ত হচ্ছে কাশিতে। এ সময় ঠান্ডা সর্দির কারণে কান বন্ধ হতে পারে। কান বন্ধের সঙ্গে কানে ব্যথাও থাকে। এসব ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া উচিত। অনেক সময় শিশুদের প্রচণ্ড সর্দি লেগে যায়। কোনো কোনো শিশুর ক্ষেত্রে ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত জ্বরও দেখা দিতে পারে। তবে বড়দের ক্ষেত্রে জ্বর ততটা তীব্রভাবে না-ও হতে পারে।

প্রতিকার

হঠাৎ ঠান্ডা যাতে না লাগে, তার জন্য বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে। জ্বর হলে গোসলে বিরত না থেকে প্রতিদিন একই সময়ে করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। চুল ও শরীরের পানি ভালো করে মুছে দিন, যাতে নতুন করে ঠান্ডা না লাগে।

জ্বর হলে কী করবেন?

এ অবস্থায় প্রথমেই জ্বর কমানোর ব্যবস্থা হিসেবে চিকিৎসকের পরামর্শে জ্বর কমানোর ওষুধ সেবনের পাশাপাশি সাধারণ তাপমাত্রার পানিতে ভেজানো তোয়ালে দিয়ে সারা শরীর মুছে দেওয়া, অর্থাৎ স্পঞ্জিং করা উচিত। জ্বর ১০১ ডিগ্রি ফারেনহাইটে নেমে না আসা পর্যন্ত এই স্পঞ্জিং চালিয়ে যেতে হবে। দু-এক ঘণ্টার মধ্যে উচ্চ তাপমাত্রার জ্বর না কমলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

সর্দি, কাশি ও গলাব্যথায় কী করবেন?

সর্দি-কাশি বা সামান্য গলাব্যথা এমন কোনো বড় ব্যাপার নয়। তবে একবার ঠান্ডা লাগলে তা সারতে অন্তত এক সপ্তাহ লাগবেই। আর কাশি তো আরও বেশ কয়েক দিন থাকতে পারে, এতে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। সাধারণ কাশির চিকিৎসা আপনিই করতে পারেন। এ ধরনের কাশি একটি নির্দিষ্ট সময় পর আপনা-আপনি ভালো হয়ে যায়। তবে কাশির সঙ্গে যদি জ্বর হয়, তাহলে গুরুত্ব দিতে হবে। ঠান্ডা খাবার, ফ্রিজের পানি পরিহার করতে হবে। কুসুম গরম পানি পান করতে পারলে ভালো হয়। ধুলোবালি এড়িয়ে চলুন।

ধূমপান করবেন না

খুসখুসে কাশির একটি অন্যতম প্রধান কারণ হলো ধূমপান করা। তাই ধূমপান পরিহার হরতে হবে।

শিশুর কাশি মানেই নিউমোনিয়া নয়

এই সময়ে শিশুরা যে সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্ট, তা বেশির ভাগই নিউমোনিয়া নয়। ভাইরাসজনিত এই রোগের নাম ব্রঙ্কিউলাইটিস। এটিকে অনেকে নিউমোনিয়া ভেবে ভুল করেন। ব্রঙ্কিউলাইটিস দুই বছরের কম বয়সের শিশুদের বেশি হয়ে থাকে। ব্রঙ্কিউলাইটিসে আক্রান্ত শিশুকে বাসায় রেখে চিকিৎসা করা যায়। তবে সুস্থ শিশুদের আক্রান্ত শিশু থেকে দূরে রাখতে হবে।

শিশুকে সিগারেট, মশার কয়েল ও রান্নাঘরের ধোঁয়া থেকে দূরে রাখুন। ভাইরাসজনিত এই রোগে সাধারণত অ্যান্টিবায়োটিক লাগে না। তবে শ্বাসকষ্ট খুব বেশি হলে খিঁচুনি, ঠোঁট নীল বা কালো হয়ে গেলে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিতে হবে।